সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সভা করতে না দেওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বিভিন্ন স্থানে পুলিশ হামলা চালিয়েছে অভিযোগ করে এনিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছে বিএনপি।
রোববারের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বলেন, “এটা সরকারের ফ্যাসিজমের সর্বশেষ নমুনা।”
বিক্ষোভে হামলার চিত্র তুলে ধরে সন্ধ্যায় নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে
দলের যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, দেশে ‘পুলিশতন্ত্র’ কায়েম করেছে সরকার।
৭ নভেম্বর ‘বিপ্লব ও সংহতি দিবস’ উপলক্ষে শনিবার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সমাবেশ করতে চেয়েছিল বিএনপি। পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় সারাদেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি দেয় তারা।
গাজীপুরে পুলিশি হামলায় বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়। বরিশাল, মাগুরা, বাগেরহাট, সিরাজগঞ্জে হামলা হয়েছে বলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
রিজভী বলেন, রাজধানীর তেজগাঁও, বাড্ডা, ভাটারা, মান্ডা, মিরপুর, শাহ আলী, দারুস সালাম, ভাষানটেক, মুগদা, ডেমরা, পল্লবীতে পুলিশি হামলায় বহু নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
রিজভী বলেন, “আজকের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা নারকীয় কায়দায় হামলা চালিয়েছে। এটা দেশের মৃতপ্রায় গণতন্ত্রের ওপর আরেকটি নির্মম আঘাত।”
বিক্ষোভে হামলার নিন্দা জানিয়ে গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
রাজশাহীতে বিএনপির বিক্ষোভ
বাগেরহাটে বিএনপির বিক্ষোভে পুলিশের বাধা
ঢাকা মহানগর পুলিশ কর্মকর্তাদের আচরণে ক্ষোভ জানিয়ে রিজভী বলেন, “এটি এখন শাসক দলের একটি শাখা অফিসে পরিণত হয়েছে। সরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে যে নিরপেক্ষতা সেটি ডিএমপির কর্মকর্তারা মাটিচাপা দিয়ে আওয়ামী কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন বলে আমরা মনে করি।”
“পুলিশ এতটাই বেপরোয়া ও মাত্রার বাইরে চলে গেছে যে তারা এখন নির্দ্বিধায় এখতিয়ারবহির্ভূত কথা বলছে ও কাজ করছে। পুলিশ এখন ধরাকে সরাজ্ঞান মনে করে।”
মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের বক্তব্যের পাল্টায় পুলিশের বিবৃতি দেওয়ার সমালোচনাও করেন বিএনপি নেতা রিজভী।
“আমরা বক্তব্য হচ্ছে, সাংবিধানিক পদে অধিষ্ঠিত একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে নিয়ে ডিএমপি এহেন শিষ্টাচারবহির্ভূত মন্তব্য করতে পারে কি না? আমরা ড. মিজানুর রহমানের বক্তব্যের সাথে একমত যে, এই অবৈধ সরকারের সাজানো পুলিশ এত বেশি আওয়ামী আর্দর্শিক চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে গেছে, তারা নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালনের কথাটি ভুলে গেছে।”
সন্ধ্যায় সংবাদ সম্মেলনের আগে বিকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের আলোচনা সভায় ফখরুল বলেন, “১৯৭২-৭৫ সালে যেভাবে তৎকালীন আওয়ামী লীগ বিরোধী মতের রাজনৈতিক ৩০ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। আজও এই অবৈধ সরকার বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের গুলি চালিয়ে হত্যা করছে।”
দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুই মামলার সমালোচনা করে তিনি বলেন, “সরকারের স্বৈরাচারী মনোভাব এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, তারা আদালতকে মাদ্রাসা মাঠে নিয়ে গেছে।”
৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়ে গণফোরাম সভাপতি কামাল হোসেনের বক্তব্য উদ্ধৃত করে বিএনপি নেতা বলেন, “ড. কামাল হোসেনের মতো আইনজ্ঞ বলছেন, যেখানে নির্বাচনই হয়নি, জনগণ ভোট দেয়নি, তাহলে এটা কার সংসদ। ওই সংসদে গঠিত সরকারটি কার?”
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে হঠাতে আন্দোলনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান ফখরুল।
জাগপা আয়োজিত এই আলোচনা সভায় দলটির সভাপতি শফিউল আলম প্রধান ছাড়াও বক্তব্য রাখেন গণস্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, এনডিপি চেয়ারম্যান খন্দকার গোলাম মূর্তজা, এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি, জাগপার সাধারণ সম্পাদক খন্দকার লুৎফর রহমান প্রমুখ।
No comments:
Post a Comment