সাবেক এক সেনাসদস্যকে আটকে অর্থ আদায়ের অভিযোগে র্যাবের অভিযানে গ্রেপ্তার পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টায়ও কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি।
এনিয়ে র্যাবের বক্তব্য, তারা ওই কনস্টেবলকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন এখন পুলিশই পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, র্যাব কোনও মামলা না করায় তারা কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না।
সাবেক সেনাসার্জেন্ট আবদুল মান্নানকে আটকে রেখে তার ব্যাংক থেকে দেড় লাখ টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে শনিবার দুপুরে র্যাব-২ ধানমণ্ডির অরচার্ড প্লাজার সামনে থেকে আটক করে কনস্টেবল জাহাঙ্গীর আলমকে।
আটকের পর জাহাঙ্গীর ও মান্নান দুজনকেই মোহাম্মদপুরে র্যাব ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মান্নান সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেন যে ওই নারী তার কাছে অর্থ পান।
পরে র্যাব মান্নানকে ছেড়ে দিয়ে রাতে জাহাঙ্গীরকে ধানমণ্ডি থানায় সোপর্দ করে। তবে তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দেয়নি র্যাব।
কনস্টেবল জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তারের পর প্রথমে ধানমন্ডি থানায় হস্তান্তর করে র্যাব। পরে কারওয়ান বাজার এলাকায় টাকা লেনদেন হয়েছে বলে কথা উঠলে ধানমণ্ডি থানা পুলিশ তাকে তেজগাঁও থানায় পাঠিয়ে দেয়।
খবর নিয়ে জানায় যায়, রোববার রাত পর্যন্ত কোনও মামলা দেওয়া হয়নি ঢাকা মহানগর পুলিশে প্ররক্ষা (প্রটেকশন ও প্রটোকল) বিভাগে কর্মরত জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ।
মহানগর পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, পুলিশ সদস্যকে থানায় দেওয়া হলেও তার বিরুদ্ধে র্যাব কোনও মামলা বা অভিযোগ দেয়নি।
“এমনকি র্যাব যার অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করেছে বলে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে জানা গেছে, তিনিও থানা পুলিশকে রোববার রাত পযন্ত কোনও অভিযোগ দেননি,” বলেন তিনি।
পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লব বলেন, “এই অভিযোগকারী কোথায় আছে, তার আমাদের জানা নেই।”
এবিষয়ে র্যাব-২ এর কর্মকর্তা মারুফ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা তাকে থানায় হস্তান্তর করেছি, থানায়ই এ ব্যাপারে যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেবে।”
অভিযোগকারী মান্নানও থানায় কোনও অভিযোগ করেননি বলে জানানো হলে র্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, “সেটা তার ব্যাপার।”
মান্নানের বিষয়ে তথ্য পুলিশ জানে না বলে জানানো হলে মারুফ আহমেদ তাকে খোঁজার দায়িত্ব পুলিশের ওপরই দিয়ে দেন।
“তিনি তো আর আমাদের কাছে নেই। হয়ত তিনি তার বাসায় আছেন। পুলিশ তাকে খুঁজে বের করে জানবে, অভিযোগ সত্য কি না।”
এখন কনস্টেবল জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে- জানতে চাইলে পুলিশ কর্মকর্তা বিপ্লবের কাছে সুনির্দিষ্ট কোনও উত্তর পাওয়া যায়নি।
“কী সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়, তা পরবর্তীতে জানানো হবে। যদি সুনির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ থাকে, তা খতিয়ে দেখা হবে।”
জাহাঙ্গীরকে গ্রেপ্তারের পর র্যাব-২ এর কর্মকর্তা এএসপি ইয়াসির আরাফাত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, গত ৬ নভেম্বর মান্নানকে তার বনানীর বাসা থেকে তুলে নিয়ে যান জাহাঙ্গীর ও তার তিন সহযোগী।
“মান্নানকে প্রথমে আরেক জায়গার সরিয়ে নেয় তারা। তার বাসা থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের চেকও নিয়ে আসে তারা। এরপর তাতে মান্নানের স্বাক্ষর নিয়ে নিজেরা টাকার অঙ্ক বসিয়ে একটি ব্যাংক একাউন্ট থেকে দেড় লাখ টাকা তুলে নেয়।”
জাহাঙ্গীর দাবি করেছেন, তার সঙ্গে পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) কবির নামের বরখাস্ত এক কর্মকর্তা ও আরও এক পুলিশ সদস্য জড়িত; তবে তাদের ধরতে পারেনি র্যাব।
No comments:
Post a Comment